Mahabharat Abhimanyu অভিমন্যু বধ ও চন্দ্রদেবের মধ্যে কি সম্পর্ক?

 


Mahabharat Abhimanyu অভিমন্যু বধ ও চন্দ্রদেবের মধ্যে কি সম্পর্ক?

Mahabharat Abhimanyu আমরা সবাই জানি মহাভারতের যুদ্ধের সময় অর্জুন পুত্র অভিমুন্য চক্রব্যূহ ভেঙেছিল। শত্রু পক্ষে বড় বড় বীর ছিল। কিন্তু অভিমন্যু একাই সবাইকে রুখে দিয়েছিল। সে যদি মায়ের গর্ভেই চক্রব্যূহর সম্পূর্ণ রহস্য জেনে যেত তবে সে ই কৌরবদের মৃত্যুর কারণ হত। কিন্তু তা হয়নি। কৌরব পক্ষের বড় বড় যোদ্ধা তাকে ছল করে মেরেছিল। কারণ তার ভাগ্যে আগেই লেখা ছিল যে সে ১৬ বছর পৃথিবীতে থাকতে পারবে। তারপর তাকে স্বর্গলোক ফিরে যেতে হবে।


তাহলে কি অভিমুন্য পৃথিবীতে কোন দেবতার অবতার ছিল?

    হ্যাঁ, অভিমন্যু দেবতার অবতার ছিল।

 

    কিন্তু অভিমুন্য কোন দেবতার অবতার ছিল?

    এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আমাদের যেতে হবে পুরাকালের সেই সময়ে যখন পৃথিবীতে অশুভ শক্তির বৃদ্ধি রোধ করার জন্য স্বর্গের দেবতাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনার চর্চার বিষয় ছিল কোন দেবতা পৃথিবীতে অবতার নিয়ে অধর্মের বিনাশ করবে।


সর্বপ্রথম নাম আসে ভগবান বিষ্ণুর। ঠিক হয় তিনি পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণ রূপে জন্ম নেবেন এবং রাক্ষসদের বিনাশ করবেন।

 

 

তাছাড়া আরও অনেক দেবপুত্রকে পৃথিবীতে অবতার হিসেবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরও ঠিক হয় চন্দ্রদেব সোমের এর পুত্র ” বরচস ”  ও পৃথিবীতে অবতার নেবে।


কিন্তু সোমদেব বলেছিলেন যে তার পুত্র বরচস তার অতি প্রিয়। তিনি তার বিয়োগ সহ্য করতে পারবেন না। এজন্য দেবতাদের তিনি তার পুত্রকে মাত্র ১৬ বছরের জন্য পৃথিবীতে পাঠানোর অনুমতি দেন এবং বলেন, ” বরচস পৃথিবীতে তখন অবতার নেবে যখন ধর্মের বিরুদ্ধে অনেক শত্রু একত্রিত হবে। আর তাদের পরাজয় করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে একসঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু সেই মহাযুদ্ধে একসময় এমন আসবে যখন না অর্জুন না শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধক্ষেত্রে থাকবেন। তখন আমার পুত্র বরচস সব শত্রুদের কাল হবে। সে তার সম্পূর্ণ দক্ষতার সঙ্গে শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে এবং চক্রব্যূহে সবাইকে ধরাশায়ী করবে। কিন্তু তাকে এই পরাক্রমের মূল্য চোকাতে হবে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে তাকে তার মানব দেহ ত্যাগ করে পুনরায় আমার কাছে আসতে হবে। কিন্তু তার দিব্য অংশ পুত্ররূপে পৃথিবীতে থাকবে যে একজন সম্রাট হিসেবে ধর্মকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। “

সোমদেবেরকথা শুনে সমস্ত দেবতা সহমত প্রকাশ করে।


মহাভারতের যুদ্ধের সময় অর্জুনের পুত্র অভিমুন্য নিজের পরাক্রম দেখায় এবং তা ছিল মহাভারত যুদ্ধের ১৩ তম দিন যখন অর্জুন এবং সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ দ্রোনাচার্যের চক্রব্যূহ থেকে দূরে কৌরবদের দ্বিতীয় অংশের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল। তখন চক্রব্যূহ ভাঙার দায়িত্ব অভিমন্যুর উপর ছিল এবং এই দায়িত্ব পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে সে কৌরবদের তিন অক্ষহিনী সেনাকে মেরে ফেলে। আসলে শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম এবং পরে কৃষ্ণ পুত্র প্রদুন্ম অভিমুন্য কে যুদ্ধের সমস্ত কৌশল শিখিয়ে তাকে অজেয় করেছিল।


কিন্তু চক্রব্যূহের শেষ ধাপে কৌরব পক্ষের অনেক যোদ্ধা একসঙ্গে মিলে ছল করে অভিমন্যু কে হত্যা করে।


 অভিমন্যু চক্রব্যূহ ভেদ করা তো জানত কিন্তু চক্রবুহের মধ্য থেকে কিভাবে ফিরে আসতে হয় তা জানতো না। কারণ যখন অর্জুন তাঁর স্ত্রী সুভদ্রাকে চক্রব্যূহ থেকে ফিরে আসার গোপন কৌশল বলছিল তখন সুভদ্রা ঘুমিয়ে যায়। সে জন্য মায়ের গর্ভে অভিমুন্য আর সেই কৌশল জানতে পারেনি এবং তাকে কৌরবদের কুচক্রের শিকার হতে হয়েছিল।

 

এভাবে সোমদেব এর পুত্র বরচস অভিমন্যুর মানব দেহ ত্যাগ করে স্বর্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং তার পিতা চন্দ্রদেব এই মুহুর্তের জন্য ১৬ বছর ধরে অপেক্ষা করছিল।


অন্যদিকে অভিমন্যুর মৃত্যুর পরে তার পুত্র জন্ম নেই যার নাম দেওয়া হয় পরীক্ষিত। আর চন্দ্রদেব এর কথন অনুসারে পরীক্ষিত পরবর্তী সময়ে সম্রাট রূপে পান্ডব বংশ কে এগিয়ে নিয়ে যায়।

 

    সমাপ্ত।

Post a Comment

Previous Post Next Post